শ্রাবণ মাসঃ ভগবান শিব: ধারণা, প্রকাশ এবং প্রতিষ্ঠা
শ্রাবণ মাসের মহাত্ম্য ঃ
শ্রাবণ মাস হিন্দু
পঞ্চাঙ্গে অত্যন্ত পবিত্র এবং গুরুত্বপূর্ণ মাস হিসেবে পরিচিত। এই মাসে অনেকগুলি
ধর্মীয় উপাস্য দেবতা-দেবীর পূজা অর্চনা করা হয়ে থাকে। তবে শ্রাবণ মাসে, ভগবান শিবের জন্য অত্যন্ত বেশি গুরুত্ব রয়েছে। ভগবান শিব পুরাতন হিন্দু
শাস্ত্র ও পুরাণে মহাকাল হিসেবে পরিচিত এবং ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং মহেশ্বরের সম্মিলিত রূপ তাঁর চরম মহিমা সূচনা করে। শ্রাবণে ভগবান শিবকে উপাসনা এবং আরাধনা করা হয় যাতে শিবের আশীর্বাদ লাভ করা যায়।
শ্রাবণের সময়ে বেল
পত্রে সহ গঙ্গাজল শিবলিঙ্গের মাথায় দেয়া এবং বিশেষ ভক্তিপূর্ণ পূজা করা হয়। সহস্র জলের লক্ষ প্রদান করে ভগবান শিবের আদর্শ
শিষ্টাচার মানব জীবনে গ্রহণ করার চেষ্টা করা হয়। এই শ্রাবণে অনেক ধর্মীয়
উত্সব ও উপবাস আয়োজিত হয় যাতে ভগবান শিবের অত্যন্ত গুরুত্ব ও মহাত্ম্য আমরা বিশেষ ভাবে জানতে পারি। শ্রাবণে ভগবান শিবের
উপাসনা করে মানুষ আত্মশুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি অর্জন করতে পারে।
ভগবান শিব:
মহাদেবের মহিমা ও ধারণা ঃ
ভগবান শিব হিন্দু
ধর্মে মহাদেব নামে বেশি পরিচিত। তিনি সৃষ্টির প্রথম দেবতা এবং মহাদেবের রূপে অত্যন্ত
মহিমা রয়েছে। মহাদেবের ব্যাপক
মহিমা প্রকৃতির প্রতি তার অগণ্য ভাবনা এবং উপাস্যতা দেখায়। তিনি নিত্য অদ্বিতীয়,
অমৃত, অনন্ত, অখণ্ড, অতীত, অব্যক্ত এবং অচ্যুত সত্য স্বরূপ। মহাদেবের
শক্তি ও মহিমা ব্রহ্মা, বিষ্ণু এবং শিবের
মিলিত শক্তির উন্মেষ বলেও ধারণা করা হয়। ব্রক্ষ্মা সৃষ্টির রচয়িতা, বিষ্ণু সেই সৃষ্টির পালক এবং রক্ষাকর্তা আর শিব হলেন সৃষ্টির সময়কাল ফুরিয়ে এলে, তার বিনাশকর্তা, নতুন সৃষ্টির আগমণের জন্যে। এই ত্রিমূর্ত্তির এই মিলিত শক্তিতেই সমস্ত জগত সংসার নিরলস চলছে, এক ছন্দোবদ্ধ মেশিনের মত।
তাই, ভগবান শিবের
ধারণা মোক্ষের দিকে একটি মাধ্যম। শিবের উপাসনা এবং ধারণা করে মানুষ আত্মবোধ এবং
আধ্যাত্মিক উন্নতি অর্জন করতে পারে। তাঁর মহিমা ও শক্তির ধারণা মানব জীবনে
সম্পূর্ণভাবে আত্মানুষ্ঠান ও উন্নতির দিকে মনোনিবেশ করতে সাহায্য করে। শ্রাবণ মাসে ভগবান শিবের মহাত্ম্য এবং ধারণা উল্লেখযোগ্যভাবে প্রকাশিত হয়, এই সময়ে ভগবান শিবের উপাসনা করে মানুষ
আত্মশুদ্ধি এবং আধ্যাত্মিক উন্নতি অর্জন করতে পারে।
No comments:
Post a Comment