স্ট্রীট ডগ (রাস্তার কুকুর)

স্ট্রীট ডগ (রাস্তার কুকুর)
ভারতবর্ষে এমন কোন রাস্তা, গলি, মহল্লা, এমন কি রাজপথও নেই- যেখানে ইন্ডিয়ান ব্রিড কুকুরদের দেখতে না পাওয়া যায়। ইভোলিউশন থিওরি অনুযায়ী আমরা প্রায় সকলেই জানি- কুকুর নেকড়ের থেকে এসেছে; নেকড়ের একটা ভাগ, রূপান্তরিত হয়েছে আজকের কুকুরে। গৃহপালিত কুকুর ( domestic dog) যার বায়োলজিকাল নাম ক্যানিস লুপাস ফ্যামিলিয়ারিস (Canis lupus familiaris), যারা হল কিনা নেকড়ে (wolf or Canis familiaris) এর একটি সাব স্পিসিস। এবং একেবারেই আলাদা জাত। এরা হল ক্যানিস জেনাসের মেম্বার, যারা আসলে মূল নেকড়ে পরিবারের ভাই বোনের মত। নেকড়ে এবং কুকুর দুজনকেই গৃহপালিত করা যায়, যদিও দুজনেই মাংসাশী প্রাণী এবং দুজনেই শিকারী প্রাণী যারা টেরেসট্রিয়াল(ভূমিগত) বা কিছু পাহাড়ের ওপরে থাকে। গ্রে রঙ এর  নেকড়েরা হল আজকের কুকুরদের সবচেয়ে নিকট উৎস স্থল। একদম আদি প্রাণীটি যার থেকে নেকড়ে বা কুকুরেরা ক্রমে বিকশিত হয়েছে, তা পৃথিবীর বুক থেকে নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে, মানুষ আসার আগেই। কুকুরদের লালন পালন করে মানুষ তার সবচেয়ে ভাল ব্রিডগুলিকে সিলেক্টিভলি নিজের সাথে সাথে বড় করেছে হাজার বছর ধরে। তার কারণ, আদি মানবও শিকারী ছিল- কুকুরের স্বাভাবিক ঘ্রাণ শক্তি, শোণার তীক্ষ্ণ ক্ষমতা, বিশেষ করে আদি মানবকে, জঙ্গলে তার শিকারের অবস্থান ও ঠিকানা খুঁজে দিতে সাহায্য করতো। কুকুরের এই বিশেষ গুণাবলীর জন্যই আজ একবিংশ শতাব্দীতেও  কুকুরই আমাদের সবচেয়ে বিশ্বস্ত গৃহপালিত প্রাণী। আর্মি, স্পেশাল স্কোয়াড, পুলিশ কোথায় তার সাহায্য আমরা নিচ্ছি না? এমন কি স্পেস বিজ্ঞানেও, অভিকর্ষের প্রভাব দেখার জন্য আমরা প্রথমে "লাইকা"-কেই পাঠিয়েছিলাম।  
প্যালিওন্টোলজিকালি, আদি প্রাণী থেকে কুকুর আর নেকড়ের জিনগত বিভেদীকরণ আজ থেকে ৪০,০০০-২০,০০০ বৎসর আগে ঘটে; তখন পৃথিবীর শেষতম বরফ যুগ ছিল। কিন্তু গৃহপালিত হিসেবে নেকড়ে এবং কুকুর দুজনকেই মানুষ বেছে নেয় আজ থেকে ১৫০০০ বছর আগে। তখন গ্রে নেকড়েরা, আমাদের পূর্বপুরুষ নোমাডিক মানুষের খাদ্য সংগ্রহ করতে সাহায্য করতো- তাদের পোষা হত প্রধানত সেই কারণেই। এখনও পর্যন্ত সবচেয়ে পুরোনো যে আর্কিওলজিকাল এবং জেনেটিক সংগ্রহ আমাদের কাছে আছে, তার বয়স ১৪২০০ বছর- যেখানে মানুষ এবং কুকুরকে পাশাপাশি শায়িত অবস্থায় পাওয়া গেছে।  এই একই সময়, মানুষ- শূয়োর, ভেড়া এবং ছাগলকেও গৃহে লালন পালন শুরু করে। শেষ হিমযুগের শেষ প্রান্তে এসে মানুষ ছড়িয়ে পড়ে পশ্চিমী ইউরোপ, সেন্ট্রাল এশিয়া আর পূর্ব এশিয়াতে। এই সময় গ্রে-নেকড়ের দল মানুষের সাথে সাথে দুইভাগ হয়ে যায়- পূর্ব এবং পশ্চিমী ইউরেশিয়ান গ্রুপ। কিন্তু ধীরে ধীরে পূর্ব ইউরেশিয়ান কুকুরের সংখ্যা, পশ্চিমী নেকড়ে থেকে উদভুত কুকুরের সংখ্যাকে ছাড়িয়ে যায়। আর এদেরই বর্তমান প্রজন্ম আমাদের দেশে ইন্ডিয়ান ব্রীড (মূলত প্যারিয়াহ) বলে উল্লেখ করা হয়। আমরা চলতে ফিরতে যাদের দেখতে পাই, তারা সবই প্রায় এই গোত্রের। 
এত লম্বা করে সারমেয় পুরাণ লিখলাম দুটো কারণে। প্রথমতঃ সাধারণের মধ্যে একটা উৎসাহ বা আরো জানার আকাঙ্খা তৈরী করতে। আর দ্বিতীয়টি হল, সবচেয়ে বিশ্বস্ত, সবচেয়ে বুদ্ধিমান এবং ডিসিল্পিনড প্রাণী হলেও, কুকুর এবং নেকড়ে দুজনেরই আদি প্রবৃত্তি এখনও তাদের মধ্যে সুপ্ত থেকে গিয়েছে। এই প্রবৃত্তিগুলির প্রধান হল এরা দুজনেই প্যাক হান্টার- মানে একা নয়, দলবেঁধে শিকার করে। আমাজনের জঙ্গলে আজও কেউ জংলী কুকুরের একটা গ্রুপের মুখোমুখি হতে চাইবেন না- সে তিনি যত বড় শিকারীই হোন না কেন। এই দলবদ্ধ ভাবে আক্রমণের হেতু সব সময় শিকার না'ও হতে পারে। সমস্ত শিকারী গোষ্ঠির স্তন্যপায়ীদের মত, কুকুরও টেরিটোরিয়াল প্রাণী। নিজের ইউরিন স্থানে স্থানে ত্যাগ করে (দেখে থাকবেন নিশ্চয়ই), ওরা নিজেদের এলাকা ডিমার্কেট করে নেয়। প্রথমবার অন্য কোন দলের কুকুর (বিশেষতঃ যদি একা হয়) ভুলক্রমে সেই নির্দ্ধারিত এলাকাইয় ঢুকে পড়ে- তাহলে তার সামনে দুটো রাস্তা খোলা; হয় ল্যাজ গুটিয়ে পলায়ন করা অথবা যুদ্ধ করা। এই অসম যুদ্ধে সেই একা কুকুরটি প্রায়শই গুরুতর রুপে জখম হয়ে পড়ে- আর বাকিরা যখন দেখে তার আর উঠে দাঁড়ানোর ক্ষমতা নেই- তখন তাকে ছেড়ে দিয়ে তার চারপাশে গোল হয়ে চিৎকার করতে থাকে- যেন ভাবখানা এমন- সময় থাকতে থাকতে কেটে পড়, নইলে প্রাণে মরতে হবে। নিতান্ত মিশুকে কুকুরও এই যুদ্ধের সময় কি ভয়ঙ্কর হয়ে উঠতে পারে, নিজের চোখে দেখেছি বলেই জানি। 
গতকাল এই অসম যুদ্ধে একটি কুকুর তার চোখটি চিরদিনের জন্য হারালো। সকলে মিলে তার একটা চোখ উপড়ে বের করে নিয়ে এসেছে। এ দৃশ্য দেখা যায় না- আমরা তাকে ঘরে তুলে নিয়ে আসি- ডাক্তার বৈদ্য করি- আগামীকাল তার অপারেশন করে খুবলে উঠে আসা চোখটাকে কেটে সরিয়ে দেওয়া হবে। হয়তো প্রাণে বেঁচে যাবে- কিন্তু শিকারী গ্রুপের প্রাণী হিসেবে সে অনেকটাই ক্ষমতা হারিয়ে ফেললো এই মুহুর্তে। 
পরাজিত-আহত কিন্তু এখনও দাঁড়িয়ে
প্রবৃত্তিই জীবনের বাহক এবং চালক। কোন কোন মানুষ চেষ্টা করে খারাপ প্রবৃত্তি থেকে নিজেকে মুক্ত করতে। কিন্তু যাদের মুখে ভাষা নেই- তাদের পৃথিবীতে প্রবৃত্তিই জীবন চালানোর এবং চালনার একমাত্র পথ। সেখানে কাউকে তারই জাত ভাইয়ের জন্য জায়গা ছেড়ে দিতে হয়। নিজের অঙ্গহানী সত্ত্বেও। পৃথিবীর আদি রিপু- "হিংসা" তার শেষও বোধহয় পৃথিবীর সাথেই শেষ হবে। তার আগে নয়। 
তথ্যসূত্রঃ উইকিপিডিয়া;
     

২৭-শে নভেম্বর

২৭-শে নভেম্বর
প্রতি বছরই তো এই তারিখটা আসে, আবার চলেও যায়। আজকের দিনটি অনেক কারণে বাঙালি এবং ভারতবাসীর কাছে মনে রাখার মত দিন। কেন? সেই কথাই আজ জানাই। আজকে অনেক মহাপুরুষের জন্মদিন। আজ ভারতীয় ইতিহাসের এক ঐতিহাসিক দিনও বটে। আবার যারা ভারতের বাহিরের বিখ্যাত মানুষদের সম্বন্ধে ওয়াকিবহাল, তাদের জন্যও আজ একজন বিশেষ মানুষের জন্মদিন। এক এক করে জানাই।

প্রথমে আসি ভারতের ইতিহাসের পাতায়।   আজ থেকে ঠিক ১০১৮ বছর আগে , ১০০১ খৃষ্টাব্দে, পেশোয়ারে এক ভয়ঙ্কর যুদ্ধ হয়েছিল - সুলতান মাহমুদ গজনীভ আর জয়পালের মধ্যে। জয়পাল দ্বিতীয় পাল সম্রাট ধর্মপালের ভ্রাতুষ্পুত্র ছিলেন। ভাগলপুরে আবিষ্কৃত নারায়ণপালের তাম্রশাসনে পাল সম্রাট দেবপালকে জয়পালের পূর্বজ বলে উল্লেখ করা হয়েছে বলে অক্ষয়কুমার মৈত্রেয় জয়পালকে পাল সম্রাট ধর্মপালের পুত্র ও দেবপালের ভ্রাতা বলে মনে করেছেন।[১] কিন্তু এই তাম্রশাসনের চতুর্থ শ্লোকে ধর্মপালের কনিষ্ঠ ভ্রাতা বাকপালের এবং ঠিক তার পরের শ্লোকেই জয়পালের গুণকীর্তন করা হয়েছে। তাছাড়া ধর্মপালদেবপালের কোন তাম্রশাসনে জয়পালের উল্লেখ নেই। এই সকল কারণে রাখালদাস বন্দ্যোপাধ্যায় অক্ষয়কুমার মৈত্রেয়ের মতকে খন্ডন করে মত দিয়েছেন যে, জয়পাল বাকপালের পুত্র ছিলেন।(সূত্র উইকিপিডিয়া) অর্থাৎ, বাংলার রাজার সাথে দিল্লীর বাদশাহের সবচেয়ে পুরোনো যুদ্ধ। জয়পাল যেই হোন, তিনি বাংলার (গৌড় বাংলার) রাজা ছিলেন এবং পাল বংশীয় ছিলেন। এই যুদ্ধে জয়পাল হেরে যান এবং তাকে বন্দী করা হয়। ছাড়া পাবার পরে, এই অপমানের জ্বালা সইতে না পেরে, তিনি জ্বলন্ত চিতাতে ঝাঁপ দিয়ে আত্মহত্যা করেন। সুলতান মাহমুদের জন্য এই জয় এক বিরাট জয় ছিল। 

আজকের দিনেই ১৮৮৮ সালে, রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর এবং মৃণালিনী দেবীর জ্যেষ্ঠ পুত্র রথীন্দ্রনাথ ঠাকুর জন্মেছিলেন। তিনি একজন বিশিষ্ট ভারতীয় বাঙালি কৃষি বিজ্ঞানী ছিলেন- তার কথা আজ ক'জন বাঙালি মনে রেখেছে? তিনি ছিলেন, বিশ্বভারতী বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রথম উপাচার্য্য। শিক্ষাবিদ এবং লেখক হিসেবেও তিনি প্রসিদ্ধ ছিলেন।

আজকের দিনেই ১৮৭৮ সালে, যতীন্দ্রমোহন বাগচী জন্মেছিলেন। তিনি ছিলেন প্রসিদ্ধ বাঙালি কবি ও সম্পাদক। 

১৮৯২ সালে আজকের দিনেই জন্মেছিলেন স্যার মুহাম্মদ আজিজুল হক । তিনি ছিলেন বাঙালি আইনজীবি, লেখক এবং সরকারি অফিসার। পড়াশুনো কলকাতার প্রেসিডেন্সি কলেজ এবং ল'কলেজে। গ্রামীন কৃষকদের ওপরে তিনি অনেক কাজ করেছিলেন। সে সময়ের অধিকাংশ রাজনৈতিক নেতারা তার সাথে কাজ করেছেন - যেমন সোহারাওয়ার্দী, জিন্নাহ, ফজলুল হক ইত্যাদিরা। তাকে পরে ব্রিটিশ সরকার থেকে অর্ডার অব দি স্টার অব ইন্ডিয়া খেতাবও প্রদান করা হয়। আজকের বাঙালি কি তাকে মনে রেখেছেন ? 

আজকে সর্বকালের শ্রেষ্ঠ এবং প্রভাবশালী মার্শাল আর্টের শিল্পী, শিক্ষক এবং অভিনেতা ব্রুস লী-র জন্মদিনও। ১৯৪০ সালে এই দিনে তিনি মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে সানফ্রান্সিস্কোতে জন্মগ্রহণ করেন। তার মৃত্যুর কারণ এখনও অজ্ঞাত। তিনি হংকং-এ মারা যান ১৯৭৩ সালের ২০-শে জুলাই। তার বিখ্যাত উক্তি " Knowing is not enough, we must apply"। আজ  এই পর্যন্তই। আবার দেখা হবে তাড়াতাড়ি। আপনাদের কমেন্টের জন্য অপেক্ষায় থাকি।
   

রিটায়ারমেন্ট

৩৫ বছরের ব্যস্ত কাজের জীবন যখন শেষ হয়ে যায়, তখন নতুন করে আবার ভাবতে হয় জীবন চালানোর জন্য। গত ২০১৬ সালের ডিসেম্বরে আমি যখন ভারতের জাতীয় খনিজ তেল কোম্পানী থেকে রিটায়ার হই, তখন আমার কাছে বিশেষ কোন আইডিয়া ছিল না এখন থেকে সারাটা দিন কি করে কাটাবো।
যদিও আমার লেখালিখির অভ্যাস ছোটবেলা থেকেই ছিল, আমার মনে হল, এখন সময় হয়েছে এই ব্যাপারে মনোযোগী হবার। ২০১৪ সাল থেকেই একটি বাংলা ব্লগে কিছু কিছু লেখালিখি শুরু করেছিলাম। সেই আমার শুরু।
আজকে প্রায় ৬-বছর পরে সাতখানি বই লেখা হয়ে গেছে- যেগুলি পাঠক সাদরে গ্রহণ করেছেন। প্রথম বইয়ের দ্বিতীয় মুদ্রণও হয়েছে।
জীবন কখনও থেমে থাকে না, এ কথা আজ আমি জোর দিয়ে বলতে পারি। আমাদের শুধু তার রাস্তাটুকু খুঁজে বের করে নিতে হয়। আর তার জন্য সবচেয়ে ভাল উপায় হল নিজের মনের ওপর বিশ্বাস রাখা। যা আমি রেখেছিলাম।
আশা করি আমার এই কথাগুলি কারো জন্য পজিটিভ ভাইব নিয়ে আসবে তার মনে আর সেই ভাবে সে তার জীবনের নতুন মানে খুঁজে পাবে।
কথিত আছে, মানব জন্ম খুব সহজে লাভ হয় না- যদি আমরা সেই সুযোগ পেয়েছি তাহলে তার প্রতিটি দিন, প্রতিটি মুহুর্ত সফল ভাবে আনন্দের সাথেই কাটানো জরুরী।
আজ এই পর্যন্তই। আবার তাড়াতাড়ি কথা হবে।

Blogging is difficult way to earn money?

  Blogging can be a way to earn money, but it's not always easy. Success depends on factors like your niche, content quality, consistenc...